বাংলাদেশে উদ্যোক্তা শ্রেণির বিকাশ নিয়ে তেমন কোনো গবেষণা হয়নি। রুশ অর্থনীতিবিদ এস এস বারানভ ষাটের দশকে এ অঞ্চলের উদ্যোক্তাদের নিয়ে একটি গবেষণা করেছিলেন। সেখানে তিনি ১৯৬৯-৭০ সালে প্রধান বাঙালি ব্যবসায়ী পরিবার হিসেবে ১৬ পরিবারের তালিকা দিয়েছিলেন। ১৬ পরিবার ছিল এ কে খান, গুল বখশ ভূঁইয়া, জহুরুল ইসলাম, ফকির চাঁদ, মকবুলার রহমান ও জহুরুল কাইয়ুম, আলহাজ মুসলিমউদ্দিন, আলহাজ শাসসুজ্জোহা (নর্দান পিপলস), খান বাহাদুর মুজিবুর রহমান, আফিলউদ্দিন আহমেদ, এম এ সাত্তার, আলহাজ মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন, মৌলভি হাবিবুর রহমান, মোহাম্মদ আবদুস সামাদ, আলহাজ এম সবদার আলী, সিরাজ উল ইসলাম চৌধুরী (আনোয়ার নিউ স্টার) এবং মোহাম্মদ ইব্রাহিম মিয়া (ইব্রাহিম মিয়া অ্যান্ড সন্স)।
স্বাধীনতার পরে বাংলাদেশে উদ্যোক্তা শ্রেণির বিকাশ নিয়ে আশির দশকে কিছু কাজ করেছিলেন অধ্যাপক রেহমান সোবহান। ‘বাংলাদেশে বুর্জোয়া শ্রেণির বিকাশ ও অভ্যন্তরীণ অসংগতি’ শিরোনামে একটি লেখায় তিনি লিখেছিলেন, ‘বাংলাদেশের পুঁজিবাদ, ১৯৬০-এর দশকে যার উদ্ভব, কোনোক্রমেই ব্যক্তি পুঁজির স্বাভাবিক বিকাশের ফসল নয়। এই শ্রেণিটির গড়ে ওঠার পেছনে ছিল মূলত আইয়ুব সরকারের একটি রাজনৈতিক-প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত। এই শ্রেণিকে গড়ে তোলার জন্য যেসব প্রতিষ্ঠান ও ঋণ-তহবিল তৈরি হয়েছিল, তার পরিকল্পনাপ্রণেতাও ছিলেন সরকার এবং যে সম্পদ এ খাতে সরবরাহ করা হয়েছিল বস্তুত তার শতকরা ১০০ ভাগই ছিল সরকারি সম্পদ। সুতরাং এই শ্রেণির নিয়ন্ত্রণাধীন শিল্পকারখানাগুলো ছিল আসলে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানেরই একটি বর্ধিত শাখা, যার মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় সম্পদসমূহকে শুধু ব্যক্তিমালিকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল।’